Energy & Environment
ভারতের হরিৎ হাইড্রোজেন উৎপাদনের সম্ভাবনার উন্মোচন
Posted On:
12 NOV 2025 1:35PM
১২ নভেম্বর ২০২৫
মূল বিষয়বস্তু
ভারত ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি বছর ৫ MMT গ্রীন হাইড্রোজেন বা হরিৎ হাইড্রোজেন উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করেছে।
দেশের প্রথম বন্দরভিত্তিক হরিৎ হাইড্রোজেন পাইলট প্রকল্প চালু হয়েছে তামিলনাড়ুর ভি.ও. চিদাম্বরনার বন্দর কর্তৃপক্ষ–এ।
দশটি রুটে ৩৭-টি হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল ও হাইড্রোজেন ইঞ্জিন যানবাহন নিয়ে মোবিলিটি পাইলট প্রকল্প চালু হয়েছে।
এই মিশনের ফলে ₹৮ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে এবং ₹১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি জীবাশ্ম জ্বালানি আমদানি হ্রাস পাবে।
ভূমিকা
ভারতের জ্বালানি রূপান্তর এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পৌঁছেছে, দেশ এখন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎপাদন বৃদ্ধি করছে। এটি ২০৪৭ সালের মধ্যে “বিকশিত ভারত” ও ২০৭০ সালের মধ্যে “নেট জিরো”–এর লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এই রূপান্তরের কেন্দ্রে রয়েছে হরিৎ হাইড্রোজেন, একটি পরিচ্ছন্ন, সুস্থায়ী জ্বালানি বিকল্প, যা কঠিন–নির্গমন শিল্পগুলিকে কার্বনমুক্ত করতে, জীবাশ্ম জ্বালানির আমদানি কমাতে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা ও শিল্পোন্নয়নের লক্ষ্যকে এগিয়ে নিতে সক্ষম।
ভারত সরকার ২০২৩ সালে জাতীয় হরিৎ হাইড্রোজেন মিশন (National Green Hydrogen Mission – NGHM) চালু করে, যা হরিৎ হাইড্রোজেনের একটি পূর্ণাঙ্গ বাস্তুতন্ত্র গঠনের পাশাপাশি, এই ক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগগুলি মোকাবিলায় একটি আচ্ছাদনের মতো কর্মসূচি হিসেবে কাজ করছে।
লক্ষ্য
এই মিশন কেবল একটি জ্বালানি প্রকল্প নয়, এটি শিল্প প্রতিযোগিতা, আমদানি হ্রাস ও দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি নিরাপত্তার কৌশলগত পথনকশা, যেখানে সুস্থায়ী উন্নয়ন ও আত্মনির্ভরতা একত্রিত হয়েছে।
হরিৎ হাইড্রোজেন কি?
হরিৎ হাইড্রোজেন হল, এমন হাইড্রোজেন যা নবায়নযোগ্য জ্বালানি (যেমন সৌর বা বায়ু শক্তি) ব্যবহার করে উৎপাদিত হয়, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারে নয়। এই প্রক্রিয়ায়, জলকে ইলেক্ট্রোলাইসিস হা তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনে বিভক্ত করা হয়, যেখানে বিদ্যুৎ আসে সৌর প্যানেল বা বায়ু টারবাইন থেকে। ভারত সরকারের মান অনুযায়ী, যদি উৎপাদন প্রক্রিয়ার মোট নির্গমন প্রতি কেজি হাইড্রোজেনের জন্য ২ কেজি CO₂–এর সমান বা কম হয়, তবে সেটিকে “হরিৎ” বলা হয়। হরিৎ হাইড্রোজেন বায়োমাস থেকেও (যেমন কৃষিজ বর্জ্য) উৎপাদন করা সম্ভব, যদি নির্গমন একই সীমার মধ্যে থাকে।

NGHM–এর লক্ষ্য হল, এমন সক্ষমতা ও বাস্তুতন্ত্র তৈরি করা, যাতে ভারত পরিচ্ছন্ন হাইড্রোজেন উৎপাদনে বিশ্বনেতা হতে পারে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই মিশনের আওতায় ১২৫ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য শক্তি ক্ষমতা যুক্ত হবে, বিশেষভাবে হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য। মোট ₹৮ লক্ষ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে, প্রায় ৬ লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হবে, জীবাশ্ম জ্বালানির আমদানি ₹১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি কমবে, ও প্রতিবছর প্রায় ৫০ MMT গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস পাবে।
মে ২০২৫ পর্যন্ত, ১৯-টি সংস্থাকে মোট ৮.৬২ লক্ষ টন বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা এবং ১৫-টি সংস্থাকে ৩,০০০ মেগাওয়াট ইলেক্ট্রোলাইজার উৎপাদন ক্ষমতা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইস্পাত, পরিবহন ও নৌপরিবহন খাতে পাইলট প্রকল্প চালু হয়েছে।
জাতীয় হরিৎ হাইড্রোজেন মিশনের কাঠামো ও বাস্তবায়ন
এই মিশন জানুয়ারি ২০২৩–এ চালু হয়, যার প্রাথমিক বরাদ্দ ₹১৯,৭৪৪ কোটি (২০২৯–৩০ অর্থবছর পর্যন্ত)। এর মধ্যে ₹১৭,৪৯০ কোটি Strategic Interventions for Green Hydrogen Transition (SIGHT) কর্মসূচির জন্য, ₹১,৪৬৬ কোটি পাইলট প্রকল্পের জন্য, ₹৪০০ কোটি গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D)-এর জন্য, ₹৩৮৮ কোটি অন্যান্য উপাদানের জন্য।

মিশনের চারটি প্রধান স্তম্ভ: নীতি ও নিয়ন্ত্রক কাঠামো, চাহিদা সৃষ্টি, গবেষণা, উন্নয়ন ও উদ্ভাবন, পরিকাঠামো ও বাস্তুতন্ত্র বিকাশ। সরকার একাধিক প্রকল্প চালু করেছে উৎপাদন ও ব্যবহারের গতি বাড়াতে, দেশীয় উৎপাদন ও রপ্তানি উৎসাহিত করতে, নিয়ন্ত্রক কাঠামো সুসংহত করতে এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করতে।
(i) SIGHT প্রকল্পঃ ₹১৭,৪৯০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা প্রকল্প, যা ইলেক্ট্রোলাইজার ও হরিৎ হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য প্রণোদনা প্রদান করে (২০২৯–৩০ পর্যন্ত)।
(ii) হরিৎ হাইড্রোজেন হাব উন্নয়নঃ অক্টোবর ২০২৫–এ নবায়নযোগ্য শক্তি মন্ত্রক তিনটি প্রধান বন্দরকে “সবুজ হাইড্রোজেন হাব” ঘোষণা করে - দীন্দয়াল বন্দর কর্তৃপক্ষ (গুজরাট), ভি.ও. চিদাম্বরনার বন্দর কর্তৃপক্ষ (তামিলনাড়ু), পারাদীপ বন্দর কর্তৃপক্ষ (ওডিশা)। এই উপকূলীয় কেন্দ্রগুলি হবে উৎপাদন, ব্যবহার ও ভবিষ্যৎ রপ্তানির প্রয়োজনে একীভূত কেন্দ্র।

(iii) মান, সার্টিফিকেশন ও নিরাপত্তাঃ এপ্রিল ২০২৫–এ চালু হয় Green Hydrogen Certification Scheme of India (GHCI), যা উৎপাদন চক্রের সম্পূর্ণ নির্গমন নিরীক্ষণ করে হাইড্রোজেনকে “হরিৎ” হিসেবে শংসায়ন করে। এই সার্টিফিকেট পাওয়া বাধ্যতামূলক যদি প্রকল্পটি: (a) কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের প্রণোদনা পায়, বা (b) দেশজভাবে বিক্রি বা ব্যবহার হয়। বিউরো অফ এনার্জি এফিসিয়েন্সি (BEE) এই শংসাপত্র দানের মুখ্য সংস্থা।
(iv) Strategic Hydrogen Innovation Partnership (SHIP)ঃ মিশনটি গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) ক্ষেত্রে সরকারি–বেসরকারি অংশীদারিত্ব–কে উৎসাহিত করছে স্ট্র্যাটেজিক হাইড্রোজেন ইনোভেশন পার্টনারশিপ (SHIP) বা কৌশলগত হাইড্রোজেন উদ্ভাবন অংশীদারিত্বের মাধ্যমে। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল, উন্নত, বিশ্বমানের প্রতিযোগিতামূলক হাইড্রোজেন প্রযুক্তি বিকাশ করা, যেখানে সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিল্পক্ষেত্র এবং একাডেমিক সংগঠনগুলি যৌথ গবেষণায় অংশগ্রহণ করবে। এই উদ্যোগের আওতায় একটি বিশেষ গবেষণা তহবিল (Dedicated R&D Fund) গঠিত হয়েছে, যেখানে সরকার ও বেসরকারি খাত উভয়ই অর্থায়ন করছে।
SHIP–এর অধীনে কনসোর্টিয়ামভিত্তিক গবেষণা উৎসাহিত করা হচ্ছে, যাতে দেশের শীর্ষ বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানগুলির, যেমন BARC, ISRO, CSIR, IIT, IISc এবং অন্যান্য অংশীদারদের, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে একত্রিত করা যায়। এর মূল লক্ষ্য হল, হরিৎ হাইড্রোজেনের মূল্য শৃঙ্খলের প্রতিটি স্তরে উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করা এবং দেশীয় উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। মিশনের অধীনে ইতিমধ্যেই ₹৪০০ কোটি টাকার একটি নিবেদিত R&D প্রকল্প কার্যকর করা হয়েছে, যা ২৩টি অগ্রগামী গবেষণা প্রকল্প চালাচ্ছে, যেমন হাইড্রোজেন উৎপাদন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সংরক্ষণ ও শিল্পক্ষেত্রে প্রয়োগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে। এর পাশাপাশি, ₹১০০ কোটি টাকার একটি "Call for Proposals" চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে স্টার্টআপগুলি হাইড্রোজেন উৎপাদন, সংরক্ষণ, পরিবহন ও ব্যবহারের নতুন প্রযুক্তি বিকাশে অংশ নিতে পারবে।
প্রত্যেক প্রকল্প সর্বোচ্চ ₹৫ কোটি পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা পেতে পারে। এই উদ্যোগগুলির লক্ষ্য হল, বিশ্বমানের প্রযুক্তি বিকাশ ও উৎপাদন খরচ হ্রাস করা, যাতে ভারত হরিৎ হাইড্রোজেন প্রযুক্তিতে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় অগ্রগণ্য অবস্থানে পৌঁছাতে পারে।
২০২৫ সালের জুলাই মাসে চালু হওয়া দ্বিতীয় দফার R&D প্রস্তাব আহ্বান মূলত যৌথ গবেষণা ও শিল্পখাতের অংশগ্রহণ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেয়। এই পর্বে EU–India Trade and Technology Council–এর অধীনে ৩০-টিরও বেশি আন্তর্জাতিক যৌথ প্রস্তাব জমা পড়েছে।
গ্রহণযোগ্যতার পথ
হরিৎ হাইড্রোজেন শুধু নীতি বা ভর্তুকিতে সীমাবদ্ধ নয়, এটি এখন শিল্প, পরিবহন ও অবকাঠামোতে বাস্তব প্রয়োগের পর্যায়ে।
শিল্পক্ষেত্রে
সার শিল্পে: জীবাশ্মভিত্তিক ফিডস্টক বদলে সবুজ অ্যামোনিয়া ব্যবহারের জন্য ৭.২৪ লক্ষ মেট্রিক টন বার্ষিক সরবরাহের নিলাম সম্পন্ন, মূল্য ₹৫৫.৭৫/কেজি।
তেল পরিশোধনে: সবুজ হাইড্রোজেন দিয়ে জীবাশ্মভিত্তিক হাইড্রোজেন প্রতিস্থাপন শুরু।
ইস্পাত শিল্পে: পাঁচটি পাইলট প্রকল্প চলছে, লোহা উৎপাদনে হরিৎ হাইড্রোজেনের কারিগরি ও আর্থিক সুস্থায়ীতা যাচাইয়ের জন্য।
পরিবহন ও চলাচলে
সড়ক পরিবহন: মার্চ ২০২৫–এ ১০ রুটে ৩৭-টি হাইড্রোজেন চালিত বাস ও ট্রাক এবং নটি রিফুয়েলিং স্টেশন চালু হয়; মোট প্রকল্প ব্যয় ₹২০৮ কোটি।
নৌপরিবহন: সেপ্টেম্বরে তামিলনাড়ুর ভি.ও. চিদাম্বরনার বন্দরে ₹২৫ কোটি টাকার পাইলট প্রকল্প চালু হয় (১০ Nm³/ঘণ্টা ক্ষমতা)। পাশাপাশি, ₹৪২ কোটি টাকার ৭৫০ m³ মিথানল রিফুয়েলিং স্টেশন তৈরি হচ্ছে, যা কান্ডলা ও টুটিকোরিনের মধ্যে “সবুজ শিপিং করিডোর” গঠন করবে।
উচ্চভূমি মোবিলিটি (লেহ, লাদাখ): NTPC ২০২৪–এ বিশ্বের সবচেয়ে উচ্চতর (৩৬৫০ মিটার) হরিৎ হাইড্রোজেন প্রকল্প চালু করে, পাঁচটি বাস ও একটি ফুয়েলিং স্টেশন। এটি বছরে ৩৫০ টন কার্বন নির্গমন কমাবে এবং প্রায় ১৩,০০০ গাছের সমান অক্সিজেন উৎপাদন করবে।
সহায়ক কাঠামো
নীতি সহায়তা: হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য নবায়নযোগ্য শক্তিতে ইন্টারস্টেট ট্রান্সমিশন চার্জ মওকুফ এবং ওপেন অ্যাকসেস অনুমোদন দ্রুত প্রদানের ব্যবস্থা।
দক্ষতা উন্নয়ন: ইতিমধ্যে ৫,৬০০–এর বেশি প্রশিক্ষণার্থী হাইড্রোজেন–সম্পর্কিত যোগ্যতায় সার্টিফায়েড হয়েছেন।
বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব
২০২৪ সালে, নেদারল্যান্ডসের রটারডামে ওয়ার্ল্ড হাইড্রোজেন সামিট-এ ভারতের প্রথম ইন্ডিয়া প্যাভিলিয়ন উদ্বোধন হয়।
ইইউ–ভারত সহযোগিতা: ৩০+ যৌথ গবেষণা প্রস্তাব দাখিল।
ভারত–যুক্তরাজ্য অংশীদারিত্ব: ফেব্রুয়ারি ২০২৫–এ স্ট্যান্ডার্ডস ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়, আন্তর্জাতিক মান ও নিরাপত্তা কাঠামো সুসংহত করতে।
H2Global সহযোগিতা: নভেম্বর ২০২৪–এ SECI ও জার্মানির H2Global Stiftung–এর মধ্যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয় রপ্তানি সংক্রান্ত যৌথ টেন্ডার ডিজাইনের জন্য।
সিঙ্গাপুর অংশীদারিত্ব: অক্টোবর ২০২৫–এ Sembcorp Industries ভি.ও. চিদাম্বরনার ও পারাদীপ বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করে, হরিৎ হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়া উৎপাদন, সংরক্ষণ ও রপ্তানি হাব স্থাপনের জন্য।
উপসংহার: পরিচ্ছন্ন উন্নয়নের উত্তরাধিকার
হরিৎ হাইড্রোজেন আজ ভারতের পরিচ্ছন্ন শক্তি নীতির কেন্দ্রবিন্দু। জাতীয় হরিৎ হাইড্রোজেন মিশন দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি, উদ্ভাবন সম্প্রসারণ এবং বৈশ্বিক বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করছে। এটি শুধু জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমায় না, বরং শিল্প রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করে ও ভারতকে বিশ্বে পরিচ্ছন্ন শক্তির পথপ্রদর্শক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে, একটি সুস্থায়ী, নিরাপদ ও আত্মনির্ভর ভবিষ্যতের পথে।
তথ্যসূত্র
Ministry of New and Renewable Energy
Download in PDF
**
SSS/SS
(Backgrounder ID: 155999)
Visitor Counter : 4
Provide suggestions / comments